এই নিয়ে লেখার একদমই ইচ্ছে ছিলনা। তবে না লিখলেই যে নয়। আমি না হলে অন্য কেউ আজ হোক কাল হোক লিখবেই। কারণ লিখতে যে হবেই। তৃতীয় বিশ্বের এই ক্ষুদ্র দেশটা যে বিশ্বের কোন কিছুতে ভাল দিক থেকে এগিয়ে নেই। মন্দের রাজ্যের রাজা হয়ে সে বিশ্বের বুকে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে কারো কি কোন মাথাব্যথা আছে? আসলেই কি আছে? হ্যাঁ আছে। কিন্তু তার জন্য কোন কার্যকর পদক্ষেপ? না এটা নেই অবশ্যই। থাকলে আজ এই সবুজ-শ্যামলীতে ঘেরা চিরচেনা আপন বাংলাদেশটাকে এতটা পর মনে হতনা। আমি লেখক নই। আমি জানি না কি করে লেখা দিয়ে পাঠক হৃদয়কে আবেগপ্রবণ করতে হয়। যদি লেখক হতাম, তাহলে হয়ত আমার মৃত্যুর পর আমার লেখাগুলো স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা নিজের মতন করে বলতেন। আমি যা বোঝাতে চাইনি সেটাও যা চেয়েছি তাও। শিরোনাম পড়ে যারা এই লেখা পড়তে এসেছেন, তারা হয়ত নিজের অজান্তেই আমার উপর ক্ষুব্দ হচ্ছেন। হবারই কথা, আমিও হতাম। কিন্তু বিশ্বাস করুন আমার যে আর কিছু করার ছিলনা। যে দেশটাকে জন্মের পর হতে মাতৃভূমি বলে মায়ের মতই ভালবেসে এসেছি সেই দেশকে নিয়ে নিজেরাই যখন খোচা দেই তখন যে খুব খারাপ লাগে। বাঙালি যে জাতি নিয়ে আমাদের গর্ব করার কথা ছিল সেই জাতিই কিনা আজ বেঈমানের প্রতীক। হয়ত কিছুদিন পর সাধারণজ্ঞানের বইয়ে সূর্যাস্তের দেশ এর সাথে যুক্ত হবে বেঈমানের দেশ বাংলাদেশ হিসেবে। এই স্বপ্ন নিয়েই কি লাখ লাখ বাঙালি নিজের প্রাণ দিয়ে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল এই ভাষা, এই দেশ? প্রশ্নটা আপনাদের কাছেই? বিবেক কি বলে দেখুন। যদি উত্তর পান হ্যাঁ এটাই তাদের কাম্য ছিল। তাহলে এই লেখা আর পড়ার প্রয়োজন নেই। এখানেই এই পেজটি বন্ধ করে দিন। আর যদি উত্তর হয় না, অবশ্যই সেটা কাম্য ছিলনা। তবে আপনাকে এই মূর্খের লেখায় স্বাগতম।

পাইরেসি! শুদ্ধ বাংলায় চুরি। আপনি জানেন যে আপনি চোর নন। কিন্তু পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করছেন, তখন নিজেকে কি বলবেন? সাধু? নিশ্চয়ই নয়। তাহলে পাইরেসি বন্ধ করুন। টাকা দিয়ে কিনুন জেনুইন মাইক্রোসফটের অপারেটিং সিস্টেম এবং তাতে ব্যবহার করুন সব বৈধ সফটওয়্যার। যদি কেনার সামর্থ্য না থাকে তাহলে বিকল্প বেছে নিন। কেননা আপনার মত এরকম অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাইরেসি আমাদের এই সোনার বাংলাতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালুকণার সমুদ্র গড়ে তোলা ভাবসম্প্রসারণের মতই ব্যপক রূপ নিয়েছে। যা নিয়ে আসতে পারেনি কোন স্বর্ণের মেডেল। কেবলই উপহার হিসেবে দেশের নাম লেখিয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে থাকা পাইরেসির দেশ হিসেবে। এসব জেনে যদি আপনার দেশের জন্য কিছু করতে ইচ্ছা করে। তাহলে সর্ব প্রথম একটি ওয়াদা করুন। আর সেটা হচ্ছে নিজেকে বদলাতে হবে সবার আগে। তাহলে দেশ নিজ হতেই বদলাবে। আমি কখনও বলছিনা। আপনি উইনডোজ ব্যবহার করবেন না। শুধু এটাই বলতে চাচ্ছি যদি টাকা দিয়ে না কিনতে পারেন তাহলে অন্তত পাইরেসি করবেন না দয়া করে। তাই এরপর যদি কেউ বিকল্প হিসেবে উবুন্টু লিনাক্সকে বেছে নেন। তারপর মূহুর্তে কিছু অজ্ঞতার কারণেই পিছু হটেন উবুন্টু থেকে। কেন? তার জন্য দরকার কিছু সচেতনতা। আর বেশি কিছু নয়। আমরা যারা নিজের টাকা খরচ করে উবুন্টু/লিনাক্স/ওপেনসোর্স প্রসারে ব্যস্ত তাদের লাভ কি বলতে পারেন? দেশের জন্য কিছু করা। উন্নত বিশ্বে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করা মাত্র। আর বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে প্রতিষ্ঠা করার জন্য যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে সেই যুদ্ধের সৈণিক আমরা। যেহেতু আমরা অন্য কোন বিষয়ে তেমন একটা কিছু জানি না। শুধু কম্পিউটার নিয়েই কিছুটা জ্ঞান আছে তাই এই খাতে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের এই প্রচেষ্টা। আর কিছু নয়।

উবুন্টু ব্যবহারের পূর্বে করণীয়

এখন আসি উবুন্টু ব্যবহারের পূর্বে কি কি করণীয়। ধরে নিচ্ছি আপনার কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। এখন ভাল ভাবে জেনে নিন আমার ইন্টারনেট সংযোগের ধরণ কি এবং সেটা কি করে উবুন্টুতে কনফিগার করে? একটু কষ্ট করে গুগলে খুঁজলেই পাবেন। এখন দেখে নিন আপনার কম্পিউটারে কি কি হার্ডওয়্যার আপনি ব্যবহার করছেন (যেমন ধরুন, প্রিন্টার, ওয়েব ক্যাম, স্ক্যানার, টিভি কার্ড ইত্যাদি) এবং সেগুলোর ড্রাইভার উবুন্টুতে রয়েছে কিনা? এবার দেখুন আপনি কি কি সফটওয়্যার ব্যবহার করেন? অর্থাৎ কি কি ধরণের সফটওয়্যার ব্যবহার করছেন। সেগুলো বিকল্প উবুন্টুতে রয়েছে কিনা? যদি এতটুকু সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন। তাহলে এবার আর একটু কষ্ট করে উবুন্টু ইনস্টলের একটা টিউটোরিয়াল জোগাড় করে ফেলুন। এবার কয়েকদিন উবুন্টু এর ব্যবহার প্রণালী অর্থাৎ কিভাবে উবুন্টু ব্যবহার করতে হয় তার শিখুন (টার্মিন্যাল, সাইন্যাপ্টিক এর ব্যবহার)। বিভিন্ন ফোরামেই এটা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। এখন চাইলে টিউটোরিয়ালটা প্রিন্ট করে নিতে পারেন। নাহলে সেটা দেখে ধারণা নিয়ে উবুন্টু ইনস্টল শুরু করে দিন। উবুন্টু ইনস্টল শেষ হলে প্রথমে আপনার ইন্টারনেট সংযোগ কনফিগার করে নিন। এবার প্রয়োজনীয় ড্রাইভার, কোডেক/রেস্ট্রিকটেড এক্সট্রা, আপনার প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ইনস্টল করে নিন। আশা রাখি এই পদ্ধতিগুলো পালন করলে আপনাদের উবুন্টু হতে আর দূরে সরে যেতে হবেনা। বা আমাদের আপনাদের কাছ থেকে নতুন করে ব্যবহারবান্ধব কথাটার সংজ্ঞা শিখতে হবেনা।

একটা কথা হয়ত আপনারা শুনে থাকবেন,

বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু আসলেই কি আমরা এগিয়ে যাচ্ছি? আমাদের এখনই এগিয়ে যাবার পথে হাঁটা শুরু করতে হবে। নতুবা অনেক দেরি হয়ে যাবে তখন আমাদের আর কিছুই করার থাকবেনা।

আমাদের এখনই এগিয়ে যাবার পথে হাঁটা শুরু করতে হবে। নতুবা অনেক দেরি হয়ে যাবে তখন আমাদের আর কিছুই করার থাকবেনা।

কথাটির তাৎপর্যঃ দেখুন আপনারা যদি এখনই ওপেনসোর্স ব্যবহার শুরু করেন, তাহলে আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী নতুন নতুন সফটওয়্যার তৈরী করা বা আপনাদের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। কিন্তু যদি আজ থেকে কয়েকবছর পর আপনারা ওপেনসোর্স ব্যবহার শুরু করেন সেক্ষেত্রে আপনাদের চাহিদা থাকবে অনেক কিন্তু সেই অনুযায়ী চাহিদা মেটানোর ক্ষমতা আমাদের থাকবেনা। তাই তখন আর কিছুই করার থাকবেনা।

তাই আর দেরি নয়, এখনই এগিয়ে আসুন।